হাইলাইট: সিরিয়াল নম্বরহীন OMR কার্বন কপি, প্রমাণের অভাবে বাড়ছে আশঙ্কা
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা ফের এক বড়সড় বিতর্কের মুখে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্য সরকার যখন জর্জরিত, ঠিক তখনই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় বড় ধরনের দুর্নীতির আশঙ্কা প্রকাশ করলেন। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছেন, পরীক্ষার OMR শিটের কার্বন কপিতে কোনও সিরিয়াল নম্বর ছিল না এবং সেই কপি পরীক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হয়নি। এই বিষয়টিকেই তিনি 'দুর্নীতির পথ প্রশস্ত' হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন।
সিরিয়াল নম্বর না থাকার অর্থ কী?
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, OMR শিটের কার্বন কপিতে সিরিয়াল নম্বর না থাকার অর্থ হল, বোর্ডের হাতে থাকা আসল ওএমআর শিট এবং কার্বন কপিকে যেকোনও সময় পাল্টে দেওয়া সম্ভব। তাঁর আশঙ্কা, "যাকে পাশ করাবে, তার কার্বন কপিতে বেশি নম্বর দিয়ে দেবে।" অর্থাৎ, পরীক্ষার্থীদের হাতে যদি প্রমাণ হিসেবে সিরিয়াল নম্বর সহ কার্বন কপি না থাকে, তাহলে নিয়োগে কোনও কারচুপি হলেও তা চ্যালেঞ্জ করা অসম্ভব।
নিয়োগ বাতিল কি সময়ের অপেক্ষা?
এই মুহূর্তে কনস্টেবল নিয়োগ বাতিল হওয়ার বিষয়ে কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত বা আদালতের চূড়ান্ত রায় নেই। তবে রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির প্রেক্ষাপট অত্যন্ত গুরুতর।
👀 SSC-র নজির: সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬,০০০ চাকরি বাতিল হয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, "একজনও দাগি অযোগ্য প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া যাবে না।"
👀 আগের কনস্টেবল নিয়োগ বাতিল: ২০১৯ সালের কনস্টেবল নিয়োগের একটি প্যানেলও অস্বচ্ছতার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্ট বাতিল করেছিল।
👀 এই সমস্ত নজিরের ভিত্তিতে, যদি শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ নিয়ে কোনো পরীক্ষার্থী আইনি পদক্ষেপ নেন এবং আদালত OMR শিট-এর বিতর্কে
শুভেন্দুর বার্তা: 'নো ভোট টু মমতা'
এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে চাকরি পাওয়া যাবে না, চাকরি তিনি দেবেন না। চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতি হবে।" তিনি বেকার যুবক-যুবতীদেরকে 'নো ভোট টু মমতা' স্লোগান তুলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর আহ্বান জানান।
উপসংহার
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগটি এখন আইনি ও রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পরীক্ষার্থীরা যদি জোটবদ্ধ হয়ে আইনি পদক্ষেপ নেন, তবেই হয়তো এই নিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। যোগ্য প্রার্থীদের উদ্বেগ কমাতে নিয়োগ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এই বিতর্কের বিষয়ে স্পষ্টতা আনা উচিত।

0 মন্তব্যসমূহ